জিতেও দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না তামিমের

 টেস্ট এবং টি–টোয়েন্টি সিরিজে হারের পর অবশেষে ওয়ানডেতে এলো স্বস্তির জয়। গতকাল রোববার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারানোর পর এখন নিশ্চয়ই বাংলাদেশ সিরিজ জয়কেই পাখির চোখ করবে। কিন্তু এর মধ্যেও ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের একটা দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না।



বাংলাদেশের ফিল্ডাররা কাল সহজ সহজ চারটি ক্যাচ ছেড়েছেন। এর মধ্যে তিনটিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেট জুটিতে। নইলে স্বাগতিকেরা অলআউট হয়ে যেতে পারত ১১২ রানেই। ৬ উইকেটের জয়ের পরও ম্যাচ শেষে এ নিয়ে অসন্তুষ্টি তামিমের কথায়, ‘ভালো দলের বিপক্ষে এই ক্যাচগুলো ছাড়াটা মূল্যবান হয়ে দাঁড়াবে। অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই বলছি, এটা নিয়ে আমি চিন্তিত। এটা বন্ধ হতে হবে, কমে আসতে হবে। ক্যাচগুলো ধরলে আমরা হয়তো এ ম্যাচে ১১৫ রান তাড়া করতাম। সমস্যা কোথায় খুঁজে বের করতে হবে । বারবার দেখবেন একই মানুষের হাত থেকে ক্যাচ পড়ছে, এটা ভালো নয়।’


ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা ৯টি ওয়ানডে জিতল বাংলাদেশ। তামিম তবু বলতে রাজি নন, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোটা এখন সহজ তাদের জন্য, ‘ভালো লাগছে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম ম্যাচ জিততে পারলাম। তবে বলব না এটা সহজ। আমাদের যদি জিততে হয় সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। তারা যে ভালো দল, বিপজ্জনক দল, এটা টেস্ট এবং টি–টোয়েন্টিতেই প্রমাণ করেছে।


ম্যাচের আগে কথাটা নাকি টিম মিটিংয়েও বলেছেন তামিম, ‘আমি বলেছি, আমি ওয়ানডে অধিনায়ক বলেই যে সব বদলে যাবে তা নয়। আমরা ওয়ানডে ভালো খেলি বলেও নয়। টি–টোয়েন্টিতে যে অধিনায়ক ছিল, টেস্টে যে অধিনায়ক ছিল, যারা খেলেছে, সবাই সাধ্যমত চেষ্টা করেছে ভালো করার জন্য। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ভালো খেলতে পারিনি।’

ভালো না খেলার দায়টাও ব্যক্তি বিশেষকে দিতে চান না ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘ওয়ানডেতে আমাদের তিন–চারজন খেলোয়াড় আছে যারা অনেক অভিজ্ঞ। আমি এমন বলব না যে আমার সংস্করণে আমরা ভালো খেলছি, অন্য সংস্করণে খেলছি না। কারণ আমিও ওই ড্রেসিংরুমে থাকি। আমি টেস্ট সিরিজে খেলেছি। টি–টোয়েন্টি দলে না থাকলেও জানি সবাই সেরাটা দেয়ারই চেষ্টা করেছে। ফলাফলটাই শুধু আমাদের পক্ষে আসেনি।’

টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর স্বাভাবিকভাবেই দলের আত্মবিশ্বাস কিছুটা কম থাকার কথা। তার মধ্যেও যে জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করা গেছে, তামিমের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সেটাই। জয়ের পেছনে অবশ্য টস জয়েরও একটা ভূমিকা দেখেন তিনি, ‘উইকেট খুব কঠিন ছিল, বিশেষ করে ওদের ব্যাটিংয়ের জন্য। টসটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শুরুতে উইকেট আমাদের সহায্য করেছে।’


ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলে আট বছর পর জাতীয় দলে ফেরা এনামুল হক টেস্ট এবং টি–টোয়েন্টি খেললেও সুযোগ পাননি প্রথম ওয়ানডের একাদশে। এ ক্ষেত্রে অধিনায়কের যুক্তিটাও উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়, ‘বিজয় (এনামুল) মাত্র দলে এসেছে। শান্তর (নাজমুল) জায়গায় ওকে খেলালে মনে হতো গত তিন সিরিজে শান্তকে খেলানো ভুল ছিল। কেন আমি শান্তকে নিয়ে ঘুরেছি এই তিন সিরিজে? আমি দল নির্বাচনটা এভাবেই করতে চাই। আমি একটা ছেলেকে নিয়ে ঘুরছি। মাঝে একজন এল আর আমি তাকে খেলিয়ে দিলাম, আমি এভাবে ভাবিনা।’

তবে নাজমুলও যে ৩৭ রান করে আউট হয়ে গেলেন, জিতিয়ে আসতে পারেননি ম্যাচ, সেটা নিয়ে অসন্তুষ্টি আছে অধিনায়কের, ‘এরকম সুযোগ বারবার আসবে না। সাকিব, মুশফিক, ইয়াসির ফিরলে তো ওর সম্ভাবনা কমে যাবে। সুযোগ এলে কাজে লাগাতে হবে।’

Post a Comment

Previous Post Next Post