‘এই তো শুরু, ... সরকার চোখে শর্ষের ফুল দেখবে, দেখতে হবে’, এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি না, অর্থনীতিবিদেরা বলছেন প্রতিটি ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। জনগণ ফুঁসে উঠছে, ফুঁসে উঠবে এবং সমস্যাই তাদের পতন ত্বরান্বিত করবে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
বিদ্যুৎ সমস্যার জন্য সরকারের দুর্নীতি দায়ী—এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এ সমস্যা যে সৃষ্টি হবে, তা আমরা বহু আগেই বলছি।’ প্রথমত সঠিক পথে সরকারের পরিকল্পনা নেই। দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। একটা জায়গা না, সব জায়গাতেই তাদের লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি করা। এই দুর্নীতি পয়েন্ট অব নো রিটার্নে চলে গেছে। একইভাবে শ্রীলঙ্কায় যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’দুর্নীতি, ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং—বাংলাদেশ কী শ্রীলঙ্কা পথেই যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সবে তো শুরু। এটা আজকের ব্যাপার না, অর্থনীতির ইতিহাস। একটা সংকটে ভবিষ্যতে কী হবে, সে বিষয়গুলো বুঝে আপনাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের, আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী এতই পাওয়ারফুল যে তাঁরা করোনাকেও নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন, অর্থনীতির সমস্যাগুলোও সব সমাধান করে ফেলেছেন। তাঁরা পারেন না এমন কোনো কাজ নেই এবং সেই বিশ্বাসে তাঁরা যা খুশি, তা–ই করে গেছেন। এখন তো শুরু হয়ে গেছে আসল খেলা। আসল সমস্যার শুরু হয়ে গেছে এবং সমস্যাই তাদের পতন ত্বরান্বিত করবে।’ বিদ্যুতের লোডশেডিং প্রসঙ্গে অতীতে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপি সরকারের প্রচণ্ড সমালোচনার কথা উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সবচেয়ে বড়াই করে বলেছিল তারা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করবে। এটি করতে গিয়ে তারা কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ক্রয় করেছিলেন বিনা টেন্ডারে এবং একটা ‘অসম্ভব’ চুক্তির মাধ্যমে। এমনকি তারা বিষয়টিতে ইনডেমনিটি দিয়েছে যে, এ বিষয়ে কাউকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। ‘অসম্ভব’ চুক্তির কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ডিজেলচালিত কুইক রেন্টালপাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে সরকারকে জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে। উৎপাদন থাকুক বা না থাকুক, সরকার তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ নিক আর না নিক, তাদের টাকা দিতেই হবে। যার ফলে আজ দেখা যাচ্ছে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই তাদের ৭৮ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগ এবং ইসি মনে হয় আহাম্মক
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব মনে হয় আহাম্মক। ১০ বছর ধরে প্রমাণিত হচ্ছে যে দলীয় সরকারের অধীনে বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এ কথা শামসুল হুদা সাহেবও বলেছেন, বেচারা হুদা (কে এম নূরুল হুদা) সাহেব—তিনিও চাকরি যাওয়ার পরে এ কথা বলেছেন। আর ইনি (কাজী হাবিবুল আউয়াল) তো এখনই বলে দিচ্ছেন যে এটা সম্ভব নয়। কালকে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে বিএনপি নির্বাচনে না এলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।’